1. live@www.sangbadeisamay.com : news online : news online
  2. info@www.sangbadeisamay.com : সংবাদ এই সময় :
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তন

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

হাবিবুর রহমান সুজন

ক্যাম্পাসজুড়ে ফুটেছে রঙ-বেরঙের কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও সোনালু। লাল-হলুদ আভায় নতুনরূপে সেজেছে প্রিয় প্রাঙ্গন। পুরোনো দেয়ালে পড়েছে নতুন রং। হাজার হাজার গাছে পড়েছে লাল-সবুজ-সাদাসহ নানা রং।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল, অনুষদ, প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে সবই লাল-নীল রঙের আলোকসজ্জায় সেজেছে নতুনরূপে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকসজ্জা। যা তৈরি করেছে উৎসবের আমেজ।

প্রায় নয় বছর পর আজ বুধবার হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির পঞ্চম সমাবর্তনকে ঘিরেই এভাবে নান্দনিক ও বর্ণিল আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাহাড় আর সবুজে ঘেরা প্রায় ২৩০০ একরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে (চবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত চারবারের সমাবর্তনের তুলনায় এবারই সর্ববৃহৎভাবে বিশেষ এই দিনটি উদযাপন করা হবে। যাকে একক কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন বলছেন কর্তৃপক্ষ।

গায়ে কালো গাউন জড়িয়ে আর মাথায় টুপি পরে, হাতে সনদ নিয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। বিশাল এই আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষক নোবেল বিজয়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তিনি। সমাবর্তনে তাকে প্রদান করা হবে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথমবারের মতো নিজ জেলা চট্টগ্রামে আসছেন তিনি। সমাবর্তনে ৪২ জনকে পিএইচডি ও ৩৩ জনকে এমফিলসহ ডিগ্রি প্রদান করা করা হবে।

বিশাল এই আয়োজনে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে শুধু তিন কোটি টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তৈরি করা হয়েছে দেড় লাখ স্কয়ার ফিটের আকর্ষণীয় প্যান্ডেল।

সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অতিথি, অভিভাবকসহ প্রায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটবে বিশাল এই মিলনমেলায়। সমাবর্তনকে ঘিরে এখন পুরো ক্যাম্পাসেই সাজ সাজ রব।
বৃহৎ এই সমাবর্তনকে ঘিরে দীর্ঘদিন পর প্রাণের সঞ্চার হবে ক্যাম্পাসে।

এতে অংশ নিতে উন্মুখ হয়ে আছেন নিবন্ধন সম্পন্ন করা প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। এর বাইরেও আরও কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আসবেন প্রিয় ক্যাম্পাসে। যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি কর্মরত আছেন নানা পেশায়। এদের কেউ আসবেন মা-বাবাকে সাথে নিয়ে। কেউবা আসবেন স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবার নিয়ে। বুধবার সকাল ছয়টা থেকে নগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১০০টি বাস সমাবর্তী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাতায়াত শুরু করবে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহইয়া আখতার আমাদের পত্রিকা কে বলেন, ‘পঞ্চম সমাবর্তন হবে এমনই এক সমাবর্তন যা শুধু চবির নয়, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী এবং বিশাল পরিসরের সমাবর্তন।

কেননা এতে প্রায় এক লাখের মতো মানুষের সমাগম ঘটবে। আমার জানা মতে আর কোনো সমাবর্তনে এত মানুষের সমাগম ঘটেনি। এবারের সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের সারাজীবনের স্মৃতিতে জায়গা করে নেবে। বিশেষ এই সমাবর্তনে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডিলিট উপাধি দিচ্ছি, যেটি আমাদের জন্য গর্বের ও আনন্দের।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সমাবর্তন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, ‘১৪ মে ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে চবি। সমাবর্তনে প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। যারমধ্যে কনভোকিদের অংশগ্রহণ ফি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এবারের সমাবর্তন দেশের যেকোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হবে। সমাবর্তন উপলক্ষ্যে পুরো ক্যাম্পাসকে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর। দেশের তৃতীয় সরকারি এবং আয়তনের দিক থেকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। এ পর্যন্ত এখানে মাত্র চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে।

এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবর্তনে অংশ নেন ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্র্যাজুয়েট। নয়জন শিক্ষার্থী পান চ্যান্সেলর পদক, আর ২৫ জন পিএইচডি ও ১৩ জন এমফিল ডিগ্রি।

চবির এবারের সমাবর্তনে ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ৪ হাজার ৯৮৭ জন, ব্যবসায় প্রশাসনে ৪ হাজার ৫৯৬ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪ হাজার ১৫৮ জন এবং বিজ্ঞান অনুষদে ২ হাজার ৭৬৭ জন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত